বাংলা মুভি রিভিউ
বাংলা মুভি রিভিউ
সিনেমা : নাম:- সীমানা পেরিয়ে(১৯৭৭)
ব্যপ্তিকাল:- ১ঘন্টা ৫৭মি.
আইএমডিবি রেটিং:৭.৬/১০।
ফরম্যাট:-রঙিন (৩৫এমএম)😞।
নির্মানকাল:-১৯৭৫।
পুরস্কার ও সম্মান:-৩টি জাতীয় পুরস্কার।
পরিচালক :-'আলমগীর কবির'।
দেশ ও ভাষা:-🇧🇩(বাংলা)।
'পরিচালক গুনে অভিনয়' এই নীতিতে ব্যক্তিগতভাবে আমি বিশ্বাসী।পরিচালক দক্ষ এবং যোগ্য কারিগর হলে ভালো মানের সিনেমা পাবেন,এতে সন্দেহ নাই।বাংলাদেশের সেরা পরিচালকের নাম যদি বলতে বলেন তাহলে প্রথম কাতারে 'আলমগীর কবিরের' নাম চলে আসবে।ঢাবি থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে গ্র্যাজুয়েশন করে,অক্সফোর্ডে যান ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে।সেখান থেকে তার সিনেমা কাজ করার উপলব্ধি জন্মায়।পৃথিবীর বিখ্যাত সব সিনেমা দেখেন এবং নিজের কাজের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান।'সীমানা পেরিয়ে' সিনেমাটি তার সেরা কাজের একটি।এত সু-নির্পূন দক্ষতার সাথে কাজ করেছেন যে এখনও আধুনিকতা ছোঁয়া যেনও ছবির মাঝে লেগে আছে।সংলাপ,স্থান,কাহিনী,পোশাকসহ প্রায় সব দিক আধুনিকতা।সিনেমাটিতে শুধু আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার পায় নি।তবে এতে আমি মোটেও আপসোস করছি না।বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দেশীয় সিনেমার যাযাবর অবস্থা,তার চেয়ে বরং এটা আমার জন্য রুপালী ইলিশ। ১৯৭০ সালে রবিশালের দক্ষিণের উপকূলীয় অঞ্চলে এক ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে এক তরুন-তরুনীকে দেখা গিয়েছিল,তাদের ঘটনাকে কেন্দ্রবিন্দু করে সিনেমাটি তৈরী হয়। টিনা (জয়শী কবির) অভিনয় দক্ষতা বৃদ্ধি জন্য লন্ডনে যাবেন।যাওয়ার আগে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসে জানতে পারে তার বাবা-মায়ের বিছন্ন থাকার কারন।এবং তার দাদা জমিদারে অত্যাচারের ইতিহাস।আর সেইখানে অত্যাচারিত কালু (বুলবুল আহমেদ) বাবা-দাদাকে খাজনা অপরাধে পুড়িয়ে মারে।তখন থেকে কালু প্রতি টিনার ভয় পেতে থাকে,এ বুঝি প্রতিশোধ নিয়ে বসবে। রাতের অন্ধকারে ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সমস্ত অঞ্চল, লক্ষাধিক মানুষ প্রান হারায়।টিনা ঝড়ের কবলে পড়ে সেই ভেসে গিয়ে আটকা পড়ে একটি দ্বীপে।সেই দ্বীপে আটকা পড়ে যায় কালুও।কালুকে নিয়ে টিনার ঠিক আগের মত ভয়-ভীতি থেকে থাকে,এ বুঝি শোধ নিবে,ইজ্জত নষ্ট করবে।মানব শূন্য সেই দ্বীপে কিছু ছিল না যে তারা পৌছাবে জন সীমানায়।তখন টিনা বিভিন্ন পদ্ধতি আঁটতে শুরু করে লাল ফ্লাগ,বোতলে চিঠি ইত্যাদি প্রচেষ্টা চালায়,বারবার বাঁধা সম্মুখীন হতে থাকে।টিনা কী পারবে গ্রাম্য নিম্নশ্রেণীর কালুর সঙ্গে দ্বীপে থাকতে!তাদের দুইজনে শেষ পরিণতি কি হয়! দেখতে চোখ রাখুন। বুলবুল আহমেদ (কালু):উনি কেমন অভিনেতা ছিল,এই সিনেমাটি দেখলে আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন।বুলবুল আহমেদকে নতুন করে শিখেছি সিনেমাটি দেখে।যেখানে সেই শহুরের সভ্য/ভদ্র/স্মার্ট লোকের অভিনয় দেখে দেখে অভ্যস্ত ছিলাম,সেইখানে গ্রামে অশিক্ষিত তোতলা অভিনয় দেখে আশ্চর্য মনে হলেও এক কথায় দূর্দান্ত ছিল।সিনেমাটি শুধুমাত্র বুলবুলের ক্লাসিক্যাল অভিনয়টা দেখতে হলেও চোখ রাখুন। গোলাম মুস্তাফা(রতন):উনি আমার জন্য চমক।আমি উনার অভিনয় ভক্ত সব-সময় ছিলাম।এই সিনেমায় তার অভিব্যক্তি ছিল অসাধারন। জয়শ্রী কবির(টিনা):মিস কলকাতা(পরিচালকের স্ত্রী) তার অভিনয়ের (রতন+কালু) মত মুগ্ধ না করলেও,আর কেউ এমন নিখুঁত অভিনয় করতে পারবে বলে মনে হয় না। মোটামুটি সবাই অভিনয় ভালো ছিল স্মার্টনেস সবাই মাঝে ছিল।ধৈর্য্য ধরে দেখলে যা আপনাকে বুঝতে দিবে না,রুপালী পর্দায় হারিয়ে এই সময় ফিরিয়ে আছেন। ছবিটা নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের লিখে থাকলে লজ্জিত।এবং কি এমন ছবিতে টুশ করে নিজের "ব্যক্তিগত রেটিং" দেওয়ার সাহস আমার নাই।যারা প্রকৃত সিনেমা উপলব্ধি করতে জানেন তাদের জন্য রিভিউটা,যেন আমার সময় ব্যয়টা স্বার্থক হয়।
No comments